চাওয়া - পাওয়া

চাওয়া - পাওয়া

- উষসী

চাওয়া পাওয়া
তিনটি করে মোট ছয় অক্ষরে দুইটি শব্দ
আক্ষরিক দিক দিয়ে চা এবং পা প্রথম অক্ষরগুলো বাদে বাকি দুটি অক্ষর একই।।

অথচ বাস্তব জীবনে এই দুইটি শব্দের কত অমিল ঠিক যেন দা-কুমড়া সম্পর্ক।।

আমরা যা চাই
কোনোভাবেই তাদের ধরা ছোঁয়া যাবেনা
তাদের ছুঁতে গেলেই হারিয়ে যাবে
দূর দূর বহুদূরে।।

আর আমাদের চাওয়াগুলোও অবাধ্য
ঠিক সেটাই চাইতে হবে যা আমরা কোনোদিন পাবোনা।

এই যেমন ধরো, আমি চাইতাম সংসারী হবো, গৃহিণী হবো, ঘর সংসার আগলে বাচ্চা মানুষ করবো, সংসার সাজাবো। চাকরি বাকরি আমাকে দিয়ে হবেনা, সে দায়িত্ব থাকবে আমার অর্ধাঙ্গের।।

কিন্তু না, আমি এমনটা চাইবো কেন!!
তাই সে চাওয়া যে পূরণ হওয়া যাবেনা, ওই যে বলেছি চাওয়া হচ্ছে অমাবস্যার চাঁদ।।

আমার সংসার হয়েছে ঠিকই, বাচ্চা মানুষ করছি ঠিকই কিন্তু চাকরির যাতাকলে পড়ে দিব্যি সংসারের ঘানি টানছি, পয়সা কামাচ্ছি। চাকরি সংসার সব সামলে যখন হাপিয়ে উঠি তখন মাঝে মাঝে ভাবি, আমি তো এমন জীবন চাইনি!!
আমি তো চেয়েছিলাম পাক্কা গৃহিণী হতে, কোমর বেঁধে সংসার করতে।
আর দেখো, হয়তো কোন শহরে কোন মেয়েটা চাকরি করতে চেয়েছিলো তাকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঘর সংসার সামলাতে বাধ্য করা হয়েছে। তার ও তো স্বপ্ন ছিলো উজ্বল ক্যারিয়ার গড়বে, এগিয়ে যাবে অনেকদূর। সেই মেয়েটার চাওয়ার মৃত্যু সেখানেই ঘটেছে।।

আবার দেখো ওই শহরের ছেলেটা কবি হতে চেয়েছিলো, পরিবারের চাপে পড়ে হতে হলো ডাক্তার।।

পাশের বাড়ির মেয়েটা তার সহপাঠীর সহধর্মিনী হতে চেয়েছিল কিন্তু তার সহপাঠী ২ ক্লাসের জুনিয়রকে ভালোবেসে বিয়ে করে নিলো।।

ওই যে মদ্যপ ছেলেটাকে দেখছো - একজনের ভালোবাসায় মদ সিগারেট ছেড়ে ভালো হয়ে গিয়েছিল। কি হাসিখুশি ছিলো ছেলেটা - যখন সাথে মেয়েটা ছিল। চেয়েছিলো স্বপ্ন দেখেছিলো মেয়েটাকে নিয়ে সুখের সংসার গড়ার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস দেখো, মেয়েটা ছেলেটাকে ছেড়ে চলে গেলো আর ছেলেটা আবার নেশায় ডুব দিলো।।

হায়রে চাওয়া পাওয়া!!
আমরা আসলেই যা চাই তা পাইনা ঠিক সেই উক্তির মতো-
আমরা যা চাই তা পাইনা
আর যা পাই তা চাইনা।।